Tuesday, 21 January 2025
Trending

বাংলা

ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী রুথ কাডবেরি মানবতার ফেরিওয়ালা লুৎফল হককে বেস্ট ফিলানথ্রোপিষ্ট অফ দা ইয়ার ২০২৩ সম্মানে ভূষিত করলেন

আলি আহসান বাপি –

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য…. এই কথাটিকে তিনি সারাটা জীবন মন্ত্রগুপ্তির মত মেনে চলেন। শৈশব, কৈশোর কেটেছে নিদারুণ কষ্টে। পেটের জ্বালাতে তিনি ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে খেয়েছেন খাবার। দারিদ্র তার করাল গ্রাস তার শৈশব, কৈশোরকে গিলে খেয়েছে। অভাবের তাড়নায় প্রাথমিকের গণ্ডি টুকু তিনি পেরোতে পারেননি। হত দরিদ্র এক পরিবারে তাঁর জন্ম। মা-বাবা দুজনেই বিড়ি শ্রমিক। কৈশোরে তিনি বাবা-মার বেধে দেওয়া বিড়ি নিয়ে ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে কারখানায় যেতেন বিড়ি দিতে। জীবনের বহু বছর তার কেটেছে অনাহারে অর্ধাহারে। সংসারে স্বাচ্ছন্দ আনার জন্য তিনি কাজ করেছেন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের, বইয়ের দোকানে, পাথরের খাদানে। তিনি বরাবরই পরিশ্রমী ছিলেন। ছিলেন স্বপ্নবাজও তিনি স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্ন দেখতেন জীবনে আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার। স্বাচ্ছন্দের স্বপ্ন দেখতেন নিত্যদিন তিনি লুৎফল হক। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার সীমান্তবর্তী গ্রাম অদ্বৈত নগর গ্রামে তার জন্ম। সেখানেই তার বেড়ে উঠা। বাণিজ্য জগতে হাতেখড়ি সেখান থেকেই। প্রথমে বইয়ের দোকান, পরবর্তীতে পাথরের ক্রাশার, তারপরে পাথরের খাদান,আগামীতে ফুড প্রসেসিং, হাসপাতাল,ওটিটি প্লাটফর্ম,রিয়েল এস্টেট ব্যবসাতেও তিনি বিনিয়োগ করবেন। বহুমুখী বাণিজ্যিক ভাবনার মানুষ তিনি। একেবারে শূন্য থেকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে উঠে আসা মানুষ তিনি। তিনি আর পাঁচজনের চেয়ে আলাদা অন্য এক জায়গায়। সাধারণত মানুষের জীবনে আর্থিক সাফল্য এলে শেকড় ভুলে যান বেশিরভাগ মানুষই। লুৎফল হক ব্যতিক্রমী মানুষ। সাফল্যে তার মাথাও ঘোরে নি, তিনি শেকড়ও ভোলেন নি। তিনি আজও নিয়ম করে প্রতিদিন তার অতীতের কথা উচ্চারণ করেন। নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট যন্ত্রণার কথাগুলো স্বজনদের কাছে বলেন।
তিনি স্পষ্টবাক মানুষ। সহজ, সরল, ঋজু। তিনি বিশাল হৃদয়ের মানুষ। ভীষণ মানবিক ও দরাজ দিলের। তাই গোটা বছরভর তিনি গরীব,দুঃস্থ,অসহায়, এতিমদের পাশে দাঁড়ান। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০০ মানুষকে বিনামূল্যে দুপুরের খাবার দিচ্ছেন। বছর দুয়েক পূর্বে ঝাড়খণ্ডের প্রায় চল্লিশটি গ্রামের মানুষকে সুখা মরসুমে প্রতিটি বাড়িতে ২৫ কেজি চালের বস্তা দিয়েছিলেন। সাথে আলু ডাল পেঁয়াজও। করোনা মহামারীতে পুলিশ সহ বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে তিনি অক্সিজেন সিলিন্ডার, খাবার সরবরাহ করেছেন। ঝাড়খন্ড -বাংলা সীমান্তবতী এলাকাগুলোতে হাজার হাজার গরীব, দুস্থ, অসহায় মানুষকে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ করেছেন। হাজারো ইমাম, মুয়াজ্জিন, পুরোহিত ও ফাদারদের সংবর্ধিত করেছেন। প্রচুর মন্দির,মসজিদ, গির্জা, ইয়াতিম খানা সহ বহু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে অকাতরে দান করেন তিনি। এসব জনকল্যাণমূলক কাজকর্মের জন্য তিনি দেশ-বিদেশের বহু পুরস্কার ও সংবর্ধনা পেয়েছেন। লুৎফল হকের এহেন মানবিক কাজে আপ্লুত হয়ে ইন্ডিয়ান রেডক্রস সোসাইটি তাকে আজীবন সদস্য পদ দিয়েছেন। বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের হাত থেকে পেয়েছেন বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল এক্সসিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। লুৎফল বাবুর মানবিক কাজের স্বীকৃতি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে দেওয়া হয়েছে সাম্মানিক ডক্টরের ডিগ্রি। তিনি পেয়েছেন এশিয়া আইকনিক অ্যাওয়ার্ডও। মালয়েশিয়ার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী ডঃ মজলি মালিক তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। বলিউডের আরেক কিংবদন্তি অভিনেত্রী মাধুরী দীক্ষিত লুৎফল হককে তুলে দিয়েছেন গ্লোবাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। বলিউড অভিনেত্রী সোনালি বেন্দ্রে তাঁর হাতে তুলে দিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম আগ্রাতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে লুৎফল হককে পুরস্কৃত করেন। সমাজ সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য ভারতের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী এস পি সিং বাঘেল তাঁর হাতে স্মারক তুলে দেন।

এবার খোদ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অফ কমন্সে সমাজসেবায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রী রুথ কাডবেরি মানবতার ফেরিওয়ালা লুৎফল হককে বেস্ট ফিলানথ্রোপিষ্ট অফ দা ইয়ার ২০২৩ সম্মানে ভূষিত করলেন। খোদ ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কক্ষে লুৎফল বাবুর মানবিক মুখের গল্প দীর্ঘক্ষণ উচ্চারিত হলো। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের বহু অতিথি ছাড়াও ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের সাংসদ লর্ড রিচার্ড হ্যারিংটন, সাংসদ বোর্নস বার্মা, সাংসদ সীমা মালহোত্রা,সাংসদ ভেলারি ওয়াজ, সাংসদ বীরেন্দ্র শর্মা,সাংসদ শৈলেশ ভারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী রুথ ক্যাডবেরি লুৎফল হকের কাজের প্রশংসা করে বলেন,লুৎফল হকের জীবনের গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে। মিসেস রুথ বলেন, মাদার টেরিজার দেশে আগামীতে আরো এক মহৎ হৃদয়ের মানুষ দেখবে মানুষ।
হাউস অফ কমনসে পুরস্কার পেয়ে কেঁদে ফেলেন লুৎফল হক। তিনি বলেন, গরীব দুঃখীর সেবা করেই আজ আমার এই মহার্ঘ্য সম্মাননা প্রাপ্তি । আমার সমাজ সেবামূলক কাজকর্ম আগামীতে আরও বৃহৎ আকারের হবে। লুৎফল হক বলেন, জীবনের সবচেয়ে বড় সুখ হচ্ছে, গরীব-দুঃখী,অসহায় – আর্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। যতদিন বাঁচবো ততদিন গরিব ও অসহায় মানুষের সেবা করে যাব।।

 

Related posts
বাংলা

Ramayan Cultural Centre celebrates the First Anniversary of the Ram Mandir Inauguration in Ayodhya

Staff Reporter – India witnessed a momentous occasion with the inauguration of the Ram…
Read more
বাংলা

Chairman, Coal India announces 11th edition of the Asian Mining Congress (Conference – AMC & Exhibition – IME) 2025

Staff Reporter – Shri P M Prasad, Hon’ble Chairman, Coal India Ltd addressed the media…
Read more
বাংলা

নীতা বাজোরিয়ার প্রশংসিত আরবান ক্রনিকলস সিরিজের সর্বশেষ বই, আরবান ক্রনিকলস ৪ এর বহুল প্রতীক্ষিত আবরণ উন্মোচন অনুষ্ঠান হল কলকাতার দ্য ক্রিয়েটিভ আর্টসে

নিজস্ব প্রতিনিধি – নীতা…
Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *