নিজস্ব প্রতিনিধি –
কলকাতার দুর্গাপুজো বিরাট বাজেট, ঝলমলে আলো, বিশাল প্যান্ডেল আর এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া জনতার সঙ্গে প্রায় সমার্থক। কিন্তু শিউলির সুগন্ধ আর কাশফুলের দুলুনির মাঝে কিছু ছোট ছোট পুজো আছে যেগুলোর আনন্দ লুকিয়ে থাকে সাদাসিধে হওয়ার মধ্যে; শিশুদের হাসি, হাতে করা কারুকার্য আর নির্ভেজাল ভক্তির মধ্যে।
এবছর এভারেডি তেমন একটা পুজোর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এভারেডি বিক্রমশিলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এমন একটা স্কুলের শিশুদের দ্বারা সংগঠিত পুজোকে সাহায্য করতে, যে স্কুলে ক্লাস ৪ পর্যন্ত পিছিয়ে পড়া শিশুরা পড়াশোনা করে। তাদের পুজোকে বিশেষ করে তুলতে এভারেডি তৈরি করেছে AA ব্যাটারিচালিত সবচেয়ে বড় রিমোট কন্ট্রোল্ড টয় ট্রাক, যা চলে ৮ খানা এভারেডি আলটিমা AA ব্যাটারিতে। যথার্থভাবে ‘আলটিমা বাহন’ নামাঙ্কিত এই অনন্য সৃষ্টি দেবী দুর্গার মূর্তিকে পুজোর জায়গায় বহন করে আনে।
অনির্বাণ ব্যানার্জি, সিইও, এভারেডি ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া লিমিটেড, আজ প্রকাশ করল টয় ট্রাক, দি আলটিমা বাহন। উপস্থিত ছিলেন বাংলার নামকরা অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার, বিক্রমশীলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটির কর্মীরা। সঙ্গে ছিল ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং মাস্টাররা।
অনির্বাণ ব্যানার্জি, সিইও, এভারেডি ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া লিমিটেড, বললেন “দুর্গাপুজো হল আনন্দ ও একাত্মবোধের উৎসব। কলকাতার সবচেয়ে বড় প্যান্ডেলগুলোর বিশালতায় বিস্মিত হতে হতে আমরা প্রায়ই ছোটগুলোকে ভুলে যাই। সেগুলোতে সমান ভক্তি দিয়ে পুজো করা হয়, কিন্তু তাদের সংস্থান অনেক কম। আলটিমা বাহনের মাধ্যমে আমরা এই শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছি এবং তাদের এমন অভিজ্ঞতা জোগাতে চেয়েছি যা তারা সারাজীবন মনে রাখবে।”
এভারেডির এই উদ্যোগ বড় বাজেটের পুজো প্যান্ডেলগুলোর গ্ল্যামারের সঙ্গে ছোট উদযাপন আর ছোট পুজোর আন্তরিক ভক্তির ফারাকের মধ্যে সেতুবন্ধন করল। স্কুলের পুরো পুজোটাকে স্পনসর করে এভারেডি নিশ্চিত করেছে যে এই বাচ্চাগুলোও মরশুমের ম্যাজিক উপভোগ করতে পারবে। তারাও ঢাকের বাদ্যি, ধূপের গন্ধ আর তাদের নিজেদের ‘আলটিমা বাহন’-এ মা দুর্গার আগমন দেখার আনন্দ পাবে।
আলটিমা বাহন-এর কাহিনি: শিশুদের খেলনার প্রতি যে ভালবাসা থাকে সেই মেজাজ মাথায় রেখে এভারেডি, ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিয়ে এই ট্রাক বানিয়েছিল। এই ট্রাক চলে ৮ খানা এভারেডি আলটিমা AA ব্যাটারিতে, যেগুলো ৪০০% বেশি শক্তি জোগায়। বাংলায় বাহন মানে হল যানবাহন, আর দুর্গাপুজোয় বাহন বলতে বোঝায় দেবী আর তাঁর পরিবারকে যারা বহন করে (সিংহ, প্যাঁচা, রাজহাঁস, ময়ূর আর ইঁদুর), তাদের। আলটিমা বাহন-এ এই বাহনগুলোর মিনিয়েচার থাকে, যা একদিকে পুজোর আসল মেজাজের প্রতীক, অন্যদিকে ভারতীয় সৃজনশীলতা ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সগর্ব নিদর্শন।
এ এমন এক যুগ যখন বাণিজ্যিক ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক যানবাহন নিয়েই কথাবার্তা হচ্ছে। সেখানে আলটিমা বাহন একটা মজার ব্যতিক্রম। এই ট্রাক চলে সম্পূর্ণ AA ব্যাটারিতে, যে ব্যাটারি স্মার্ট রিমোট, খেলনা ইত্যাদি ঘরোয়া জিনিস চালায়।
এই উপলক্ষে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার বললেন “দুর্গাপুজো আমার খুব আপন, কারণ এর সঙ্গে অনেক আবেগ জড়িয়ে আছে। ছোটবেলায় আমি ঠাকুর বাড়িতে নিয়ে আসতে খুব ভালোবাসতাম। আজকে বাচ্চাদের আনন্দ দেখে সেই স্মৃতিগুলো ফিরে এল। আলটিমা বাহন খুব সুন্দর একটা উদ্যোগ – শুধু ব্যাটারিতে চলা একটা টয় ট্রাকে মা দুর্গাকে
বহন করে আনা। এটা মনে করিয়ে দেয় যে বিশেষভাবে উদযাপন করার জন্যে উৎসব সবসময় বিরাট হওয়ার দরকার নেই। অনেকসময় খুব সামান্য আনন্দও সবচেয়ে অবিস্মরণীয় স্মৃতিটা তৈরি করে দিতে পারে।”
পিয়ালী বিশ্বাস, শিক্ষিকা, বিক্রমশিলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটি, বললেন “বিক্রমশিলায় বরাবরই আমাদের মিশন ছিল শিশুদের এমন সুযোগ দেওয়া যা একইসঙ্গে শেখায় এবং আনন্দ দেয়। এবারের দুর্গাপুজোয় এভারেডির মদতে আমাদের বাচ্চারা এমনভাবে সৃষ্টি করতে এবং উৎসব পালন করতে পেরেছে যা তারা কেবল স্বপ্নেই ভাবতে পারত। আলটিমা বাহন স্রেফ একটা রেকর্ড ভেঙে দেওয়া ট্রাক নয়। এটা এখানকার প্রত্যেকটা বাচ্চার জন্যে আনন্দ আর গৌরব বয়ে এনেছে।”
সব রেকর্ডের ঊর্ধ্বে এক উদযাপন: দি ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস আর এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস আলটিমা বাহনকে সবচেয়ে বড় AA ব্যাটারিচালিত রিমোট কন্ট্রোল্ড টয় ট্রাক হওয়ার স্বীকৃতি দিয়েছে। লিখিত শংসাপত্র এভারেডি নেতৃত্বের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ট্রাকটা জনতার দেখার জন্যে পুজোর দিনগুলোতে ৯৫ পল্লী পূজা অ্যাসোসিয়েশনের প্যান্ডেলে রাখা থাকবে।
ঠাকুর দেখার মরশুমে মানুষ যখন সারা শহর জুড়ে ঝলমলে আলো আর বিরাট থিম দেখে বেড়াচ্ছেন, তখন এভারেডির এই উদ্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে পুজোর আসল কথা হল ভাগ করে নেওয়া আনন্দ আর সাদাসিধে ভক্তি।