নিজস্ব প্রতিনিধি –
আজব সহর কলকেতা/রাঁড়ি বাড়ি জুড়ি গাড়ি কথার কি কেতা/হেথা ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে বলিহারি ঐক্যতা/যত বক বিড়ালে ব্রহ্মজ্ঞানী, বদমাইসির ফাঁদ পাতা।’
কালজয়ী নকশায় লিখে গিয়েছেন হুতোম ওরফে কালীপ্রসন্ন সিং। হুতোমি কলকাতা বহিরঙ্গে বদলেছে বিপুল। কিন্তু মহানগরের অন্দর-কুঠুরিতে আজও উনিশ শতকীয় নগরের ছায়া-মায়া! এখন কী হাল কালীপ্রসন্নর জোড়াসাঁকোর বারাণসী ঘোষ স্ট্রিটের সিংহবাড়ির?
চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক, গাজন-দলের ঘোরা এবং সঙের নগরকীর্তন ছিল কলকাতার অঙ্গ। চড়ক ও সঙের রেশ নগরের নিচতলায় এক্কেবারে হারায়নি এখনও। আবার ক্লাইভের আমল থেকেই শোভাবাজারে রাজা নবকৃষ্ণ দেবের বাড়ি ছিল বাবুবিলাসের পীঠস্থান। হুতোমের নকশায় সজীব শোভাবাজার। হাটখোলার দত্তবাড়ির মতো সেখানেও গিয়েছিল TV9 বাংলা। তখনকার অনেক চিহ্ন সেঁটে আছে এখনকার নগরেও। TV9 বাংলার ক্যামেরায় উঠে এল সেই সময় এবং এই সময়।
ঊনিশ শতকে বঙ্গসমাজের কেচ্ছা-কাহিনি শুধু হুতোমের নকশাতেই জ্যান্ত হয়নি। সময়টা ১৮৭৩। সব ছাপিয়ে গেল মোহন্ত-এলোকেশীর মাখোমাখো গপ্পো ও শেষমেশ স্বামীর স্ত্রী হত্যা। ‘মোহন্ত-এলোকেশী সংবাদ’। কী সেই কাহিনি? মাধবচন্দ্র গিরি তখন তারকেশ্বরের মোহন্ত মহারাজ। গাঁয়ের রূপসী মেয়ে এলোকেশী গেলেন দেব-দর্শনে। ফলে সন্ন্যাসীর তপস্যাভঙ্গ আর স্বামী সোহাগিনী এলোকেশী মোহন্তের অঙ্কশায়িনী। বিদেশ থেকে ঘরে ফিরে এসে সব শুনলেন নবীন। তবু সুন্দরী স্ত্রীকে ত্যাগ করতে চাননি তিনি। এলোকেশীকে নিয়ে কলকাতা পালিয়ে যেতে চাইছিলেন নবীন। কিন্তু দোর্দণ্ডপ্রতাপ মোহন্তের বাধায় শেষমেশ নবীন আঁশবটিতে এলোকেশীর গলাকেটে আত্মসমর্পণ করলেন পুলিশের কাছে। ব্যস, তোলপাড় উনিশ শতকের বাংলা। হুতোমের নকশাতে আছে সেদিনকার বাবুমহলের ব্যভিচার। এ সব নিয়ে গল্পগাছা, কেচ্ছা-কাহিনি জনসংস্কৃতির অঙ্গ। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে হুতোমের সেই কলকাতাকেই খুঁজল TV9 বাংলা। সঙ্গে বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়ের গান এবং বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী জগন্নাথ বসুর পাঠ।