Sunday, 22 December 2024
Trending

উপাসনা

শুভ হেরা পঞ্চমী উৎসব উপলক্ষে কলকাতা ইস্কনের গুণ্ডিচা মন্দিরের দেবী মহালক্ষ্মী বিশেষ শৃঙ্গার রূপের পুণ্য দর্শন

নিজস্ব প্রতিনিধি –

হেরা পঞ্চমীতে বিপুল ভক্তের সমাগম, জগন্নাথদেবের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে।এই দিনেই লক্ষ্মী দেবী নীলাচল থেকে সুন্দরাচলে এক দিনের নাম করে চলে আসা জগন্নাথ দেবের সাক্ষাৎ হয়েছিল বলে কথিত আছে। সেখানে জগন্নাথ দেবের সতীর্থ আর লক্ষীদেবীর দাসীদের সাক্ষাৎ হয়। কেবল তাই নয় সেখানেই দেবী খুঁজে পান জগন্নাথ দেবকে। এই পবিত্র স্থানই গুন্ডিচা মন্দির। জগন্নাথ মন্দিরের হেরা পঞ্চমী উৎসবের উল্লেখ স্কন্দপুরাণে পাওয়া যায়। মন্দিরের ইতিহাস অনুসারে, এই উৎসব শুরু হয়েছিল রাজা কপিলেন্দ্র দেবের

রাজত্বকালে। তার আগে হেরা পঞ্চমী মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে প্রতীকী উপায়ে পালিত হত। মাদলা পাঁজি অনুসারে, রাজা কপিলেন্দ্র দেব সেই প্রথার পরিবর্তে সোনার মহালক্ষ্মী মূর্তি গড়িয়ে বর্তমান উপায়ে উৎসবটির প্রচলন ঘটান।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে করে যাওয়ার আগের দিন অর্থাত শৃঙ্গার ও নবযৌবন প্রাপ্তির দিনেই জগন্নাথদেব মহালক্ষ্মীকে কথা দিয়ে যান যে, পরের দিনই তিনি ফিরে আসবেন। কিন্তু চার দিন পরেও তিনি না ফিরলে স্বামী কেমন আছেন, সেই চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন মহালক্ষ্মী । পাঁচ দিনের দিন দেবী বিমলার পরামর্শে জগন্নাথের মাসির বাড়ি গুন্ডিচা মন্দিরে পালকি করে উপস্থিত হন তিনি। মহালক্ষ্মী আসছেন এই খবর পেয়েই গুন্ডিচা

মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেন জগন্নাথ। এর ফলে মহালক্ষ্মী অত্যন্ত রেগে যান। এবং ক্ষুব্ধ হয়ে লক্ষ্মী জগন্নাথের রথের চাকা ভেঙে পুরীর হেরা গোহিরি সাহিতে নির্মিত তাঁর মন্দিরে ফিরে আসেন। পুরাণে কথিত আছে, জগন্নাথ দেব একটি বিশেষ মিষ্টি দিয়ে স্ত্রী লক্ষ্মীর অভিমান ভঙ্গ করেছিলেন। সেই দিনটিও ছিল বিশেষ, আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথি।
ফি বছরই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ধুমধাম করে পালিত হয় রথ যাত্রা উৎসব। সেই উৎসব সম্পন্ন হয় একাধিক উপাচার মেনে, যার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ মিলবে স্কন্দপুরাণে। এই রথ যাত্রা উৎসবের একটি বিশেষ দিন হল আষাঢ় মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথি, যা ‘হেরা পঞ্চমী’ নামে পরিচিত। সাধারণ অর্থে ওই দিনটি হল রথ যাত্রার পঞ্চম দিন। পুরাণ মতে, শ্রী জগন্নাথ দেব ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে পারি দিয়েছিলেন গুন্ডিচা মন্দিরে। স্ত্রী লক্ষ্মীকে সঙ্গে না নেওয়ায় তিনি

ক্রোধান্বিত হন এবং পঞ্চম দিন রাতেরবেলা ‘সুবর্ণ মহালক্ষ্মী’ রূপ ধারণ করে সেবকসহ পালকিতে চেপে ওই মন্দিরে উপস্থিত হন। ক্রুদ্ধ লক্ষ্মী দেবীর আগমনের খবর পেয়ে জগন্নাথ দেব গুন্ডিচা মন্দিরের প্রধান দ্বার বন্ধের নির্দেশ দেন। দেবী লক্ষ্মী ভয় দেখিয়ে স্বামীকে ঘরে ফেরাতে চেয়েছিলেন। গুন্ডিচাতে গিয়ে তিনি স্বামী জগন্নাথের উদ্দেশ্যে সেবককে দিয়ে সংবাদ পাঠান ফিরে আসার জন্য।
স্ত্রী লক্ষ্মীর কথায় জগন্নাথ দেব সম্মতি জানিয়ে উপহার হিসেবে পাঠান ‘আজ্ঞা মালা’ এবং দেবীর অভিমান ভঞ্জন করতে ‘লক্ষ্মী বিলাস’। যা ‘প্রসন্ন ভোগ’ নামেও পরিচিত। এই বিশেষ মিষ্টি দেবী লক্ষ্মীর অত্যন্ত প্রিয়।তবে এতেই ক্রোধ যায়নি দেবীর। তাঁর রাগ গিয়ে পড়ে জগন্নাথ দেবের রথের উপর। সেই রথ নষ্ট করার আদেশ দিয়ে দেবী তেঁতুল গাছের আড়ালে লুকিয়ে দেখেছিলেন। এই লুকিয়ে দেখার অর্থ হল ‘হেরা’ আর সমস্ত ঘটনাটি পঞ্চমী তিথিতে ঘটেছে বলে ওই দিনটি ‘হেরা পঞ্চমী’ নামে পরিচিত।

ছবি ও সংবাদ সংগ্রহ – প্রীতম মুখোপাধ্যায়।

 

Related posts
উপাসনা

বিশেষ পূজার আয়োজন করা হলো বাবা ভূতনাথ মন্দির ধামে

নিজস্ব প্রতিনিধি – হিন্দু সৎকার…
Read more
উপাসনা

রবীন্দ্র গ্রামে স্বামী প্রনবানন্দ - রবীন্দ্র মূর্তি, চরম উৎসাহ উদ্দীপনা মানুষের মধ্যে

নিজস্ব প্রতিনিধি – দক্ষিণ ২৪ পরগণা…
Read more
উপাসনা

পোদ্দার পরিবারের হাত ধরে এবার বৃহত্তর কোলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে একদম নতুন রূপে পূজিত হলেন মাতা জগদ্ধাত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি – মূর্তির দিকে…
Read more

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *