নিজস্ব প্রতিনিধি –
বাঙালির সোনালি অতীতের অন্যতম অভিজ্ঞান তার গান। প্রায় এক হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সাধকদের সাধনসঙ্গীত চর্যাপদ দিয়ে সেই যাত্রার সূত্রপাত। তার পর শ্রীকৃষ্ণকীর্তন বাঙালিকে মোহিত করেছে।
মধ্যযুগে বাংলা গানের ধারায় সব থেকে উল্লেখযোগ্য সংযোজন বৈষ্ণব পদাবলি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পদাবলির রূপ পরিবর্তিত হয়ে জন্ম নিল কীর্তন। এক সময় গ্রামবাংলা প্লাবিত হয়েছিল কীর্তনের সুরে। আজও তা মলিন হয়নি। আধ্য়াত্মিক গানের আর এক ধারা শ্যামাসঙ্গীতের সূত্রপাত অষ্টাদশ শতাব্দীতে, মূলত রামপ্রসাদ সেনের হাত ধরে। আবার বাউল গানের আখরে গোপনে ধরা রয়েছে সাধনার গূঢ়তত্ত্ব।
ধর্মীয় মোড়ক খুলে নিছক বিনোদন হিসেবে বাংলা গানের যাত্রাও বড় বিচিত্র এবং খুবই সমৃদ্ধ। আখড়াই, হাফ আখড়াই, কবিগান, টপ্পা, খেয়াল, ধ্রুপদ, ঠুংরি— কতই না তার রকমফের!
এর পর বাংলা গানকে এক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দিলেন রবীন্দ্রনাথ। তাঁর জাদু কলমের ছোঁয়ায়, অসামান্য সুরের পরশে বাংলা গান হয়ে উঠল বিশ্বজনীন। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করলেন কাজী নজরুল ইসলাম, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, অতুলপ্রসাদ সেন, রজনীকান্ত সেন।
তাঁদের গানের রেশ স্মৃতিতে নিয়েই নতুন দিগন্তে পা ফেলল বাংলা গান। পঙ্কজ মল্লিক, শচিন দেব বর্মন, সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, শ্যামনল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়… চলচ্চিত্রে, আর তার বাইরেও সে যেন বাংলা গানের স্বর্ণযুগ।
মাঝে কিছু নিষ্ফলা বছরের পরে, ফের কবির সুমনের কথায়-সুরে ঘুরে দাঁড়াল বাংলা গান। মরা গাঙে ফের জোয়ার এল। সেই ধারা আজও বহমান।
নতুন বছরের প্রথম দিনে বাংলা গানের সেই দশ দিগন্তকে নতুন করে আপনাদের সামনে তুলে ধরবে টিভি নাইন বাংলা। গান শোনাবেন আনন্দী বসু, অভিজিৎ আচার্য, রূপঙ্কর বাগচী, হৈমন্তী শুক্লা, সৌরভ মনি, শ্রীকুমার চট্টোপাধ্যায়, সিধু, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, ড. সুখবিলাস বর্মা ও অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
দেখুন, বাঙালিয়ানা: কী জাদু বাংলা গানে।
শনিবার, সকাল ৮