নিজস্ব প্রতিনিধি –
নেফ্রোকেয়ার ইন্ডিয়া’ তৈরি করল তিনটি আলাদা প্রোগ্রাম। রেনোগার্ড ৩৬০, ডায়াগার্ড ৩৬০ ও রিশেপ ৩৬০। এগুলি যথাক্রমে কিডনি, ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো সমস্যার মোকাবিলা করবে। রবিবার সকালে মধ্যমগ্রামের ভিভাসিটি হাসপাতালে এই তিনটি প্রোগ্রামের সূচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন নেফ্রোকেয়ারের কর্ণধার তথা নেফ্রোলজিস্ট ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডা. প্রতিম সেনগুপ্ত, রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডা. প্রদীপ মিত্র, প্রাক্তন ফুটবলার বিকাশ পাঁজি, যোগগুরু শুভব্রত ভট্টাচার্য-সহ বহু বিশিষ্ট। প্রতিম জানালেন, এতদিন মানুষ অসুস্থ হলেই হাসপাতালে যেতেন। এখন রোগ ঠেকাতে হাসপাতালে যাবেন। রোগীদের পাশাপাশি হাসপাতালের কর্মী ও সাধারণ মানুষও ভিভাসিটিতে এসে ‘মুক্তি’-র স্বাদ নিতে পারবেন। যোগ-প্রাণায়ামের মাধ্যমে রোগভোগ কমাতে পারবেন, দূরে রাখতে পারবেন। প্রতিম আরও -জানালেন, “এতদিন আমাদের রোগীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এই মুক্তি প্রকল্প। এবার সবার জন্য উন্মুক্ত করা হল।”প্রতিমের পর্যবেক্ষণ, “রোজ নিজের স্বাস্থ্যের জন্য একটু সময় বের করা উচিত। কিন্তু দিশা, পান না কীভাবে করবেন। ‘মুক্তি’ দিশা দেবে।”
আসলে এখন ২১ জুন বিশ্বজুড়ে যোগ দিবস পালিত হচ্ছে। যোগের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে আম জনতার। কিন্তু সমস্যাও আছে। ব্যাঙের ছাতার মতো যোগ স্টুডিও গজিয়ে উঠেছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকায় ক্ষতিও হয়ে যাচ্ছে মাঝেমধ্যে। প্রতিমের দাবি, “আমরা এখানে গাইডেড যোগ, মেডিটেশন করাব। এখানে বাইপাস সার্জারি হবে, কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হবে আবার যোগ-
প্রাণায়ামও হবে। যোগগুরু শুভব্রত ভট্টাচার্য জানালেন, “আমাদের বেশিরভাগ লোকের ব্রিদিং প্যাটার্ন ঠিক নেই। আমরা রোগীদের ‘পারাডক্সিয়াল ব্রিদিং’ বন্ধ করে ‘অ্যাবডোমিনাল ব্রিদিং’ করানোর চেষ্টা করছি। তাতেই অনেক কাজ হচ্ছে। আসলে, কিডনির রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, ঠিকমতো চিকিৎসা সত্ত্বেও অনেক সময় ‘অক্সিজেন স্যাচুরেশন’ কম থাকছে। মুক্তি প্রকল্পে এমন কিছু প্রাণায়াম শেখানো হবে যাতে রোগীরা এই সমস্যাগুলির সঙ্গে যুঝতে পারেন। নেফ্রোকেয়ার টিমের দাবি, হাসপাতালের সঙ্গে যোগ এই প্রথম

আসলে, যোগ শুধু শরীরচর্চা নয়, যোগ আরও বেশি কিছু। যোগ চিত্তবৃত্তি নিরোধক। অর্থাৎ অস্থিরতা কমিয়ে মনতে শান্ত করে। আসলে আমরা বেশিরভাগ মানুষ শরীর নিয়ে বেশি চিন্তিত। মনেরও খেয়াল রাখতে হয়। মনে করিয়ে দিলেন প্রতিম। জানালেন, “যম, নিয়ম হচ্ছে সুস্থ থাকার মূল চাবিকাঠি। আর এটা করতে সাহায্য করে যোগ। মৃত্যুকে অনুভব করতে পারলে বাঁচাটা অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং হয়।” এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ। তিনি জানালেন, “এখানে আগে রোগ হলে আসতাম। এখন সুস্থ থাকার জন্য আসব।” ডা. প্রদীপ মিত্র, ডা. ডি পি সিনহার মতো চিকিৎসকরাও এদিন ‘মুক্তি’ প্রকল্পের কার্যকারিতা দর স্বীকার করে নেন। জানান, উন্নত দেশের মৃত্যুহার কম কোনও ওষুধের জন্য নয়। জীবনশৈলীর পরিবর্তন করে। সত্যি এ দেশে মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ নিয়মিত শরীরচর্চা করেন। তাই তো এত ‘লাইফস্টাইল ডিজিজ’-এর বাড়বাড়ন্ত। এদিন মুক্তি প্রকল্পের জন্মদাতা প্রতিম সেনগুপ্তর জন্মদিনও পালিত হয় অনুষ্ঠান শেষে। শুভব্রত জানান, একটা ছোট ইচ্ছা যে কোথায় যেতে পারে, তার প্রমাণ এই ‘মুক্তি’। ভাবি, ৮ হাজারের বেশি মানুষ এই প্রকল্প থেকে সুবিধা পেয়েছে।