মুক্তি আসন্ন বাংলা ছায়াছবি পহেলা বৈশাখ

Spread the love

নিজস্ব প্রতিনিধি –

অতি স্বাধারণ মধ্যবিত্ত ইন্দ্রর জীবন সম্পূর্ণভাবে বদলে যায় একটা রাতের একটা ছোট্ট ঘটনায়। ইন্দ্রর সদ্য চাকরি পাওয়ার আনন্দে ইন্দ্র, তার জামাইবাবু রণজিৎ এবং তার খুব কাছের বন্ধু অনির্বাণ একসাথে পার্টি করছিল। এবং এই পার্টির শেষেই এক অপ্রাকৃতিক ঘটনায় ইন্দ্র আটকে যায় একটা নির্দিষ্ট দিনে – পয়লা বৈশাখে। ইন্দ্রর প্রেমিকা মৌমিতা ও তার বন্ধুবান্ধব এবং তার পরিবারের সকলের কেউই ইন্দ্রর এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতোনা আর দিনের- পর দিন একইভাবে একই দিন কাটাতে কাটাতে ইন্দ্র ধীরে ধীরে আশা হারিয়ে ফেলতে থাকে আর অস্থিরতায় ভুগতে থাকে। তার আশেপাশের কেউই তাকে বিশ্বাস বা সাহায্য করে না। এরকম এক চরম পরিস্থিতিতে নার্গিসের সাথে ইন্দ্রর দেখা হয়। নার্গিস একজন বিজ্ঞানী, সে নিজেও ইন্দ্রর মতো একই দিনে অর্থাৎ পয়লা বৈশাখে আটকে রয়েছে। ইন্দ্র নার্গিসের থেকে জানতে পারে যে তাদের এই অতি প্রাকৃতিক সময়যাত্রার মূলে রয়েছে একটা বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা যা কিনা নার্গিস আর তার বাবা প্রফেসর আহমেদ একসাথে আমেরিকায় করছিল। এবং বছর খানেক আগেই প্রফেসর আহমেদ তাদের গবেষণাগার আমেরিকা থেকে হাওড়ায় স্থানান্তরিত করেছিল এবং তার কিছু মাস পড়েই নার্গিসের সাথে প্রফেসার আহমেদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং প্রফেসর আহমেদ নিখোঁজ হয়ে যান। এবং প্রফেসর আহমেদকে খুঁজতে গিয়েই নার্গিস এই টাইম লুপে আটকে পড়ে। নার্গিসের মনে হয় তাদের বানানো যন্ত্র আই টি ডি এস এস এর উপর এক্সপেরিমেন্ট করতে করতেই প্রফেসর আহমেদের সাথে কোন দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, যার ফলস্বরূপ তাদের এই পরিণতি। ইন্দ্র আর

নার্গিস দুজনে মিলে এবং প্রফেসর আহমেদের ফেলে যাওয়া প্রতিটি সূত্র কে পর্যবেক্ষণ করে তাদের সাথে ঘটা এই ঘটনার সমাধান করার চেষ্টা করে। কিন্তু সময় তাদের সাথে আবার বিশ্বাসঘাতকতা করে, তারা লক্ষ্য করে তাদের প্রতিটা দিন অর্থাৎ প্রতিটা পয়লা বৈশাখ ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। এবং পুরো পৃথিবী তাদের থেকে অনেক বেশি তাড়াতাড়ি চলতে শুরু করেছে, এবং তারা এই পয়লা বৈশাখ সময় প্রবাহর তুলনায় ধীর গতি হয়ে পড়েছে। নার্গিস তার টাইম ডাইভার্জেন্স সিগন্যাল রিপিটার মেশিন পরীক্ষা করে বুঝতে পারে, তারা একটা স্পেস টাইম ভরটেক্সে আটকে পড়েছে। যেখানে প্রতিটা পয়লা বৈশাখ আগের পয়লা বৈশাখের থেকে ছোট হয়ে যাচ্ছে। এবং এই সময় ঘূর্ণি অবশেষে গিয়ে মিশে যাবে সিঙ্গুলারিটিতে। এবং তাদের সময় প্রবাহর সাথে তাদের জীবনেরও অস্তিত্ব হারিয়ে যাবে। এই সমস্ত টানাপোড়ানোর মধ্যে তাদের কাজে ক্রমাগত বাধা দিতে থাকে এক অদ্ভুত কালো পোশাক ও মুখোশ পড়া মানুষ; ক্রমাগত নার্গিস কে সে খুন করার চেষ্টা করতে থাকে।

আর এত সবের মধ্যে ইন্দ্র আস্তে আস্তে মৌমিতার থেকে দূরে সরে আসে এবং নার্গিসের কাছাকাছি চলে আসে , আস্তে আস্তে ইন্দ্র আর নার্গিস একে অপরকে ভালোবেসে ফেলে ।

নাগিস বুঝতে পারে তার বাবার রেখে যাওয়া অসম্পূর্ণ সূত্র থেকেই কোনো পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। আর সব সমস্যার জট খোলা সম্ভব। নার্গিস চেষ্টা করে তার বাবার প্রজেক্টের সাথে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের সাথে আবার কোনোভাবে যোগাযোগ করার। কিন্তু কোনভাবেই নার্গিস তা পারে না । এমনই এক সময় হঠাৎই নার্গিসের বাবার সহকর্মী- মাজিদের সাথে তাদের দেখা হয় এবং তারা জানতে পারে যে মাজিদও তাদের মত সময় ঘূর্ণি মধ্যে আটকে পড়েছে । এবার তারা তিনজন মিলে সময় ঘূর্ণি বা স্পেস টাইম ভরটেক্সের থেকে বেরোনোর পথ খুঁজতে থাকে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পড় ইন্দ্র, নার্গিস, মাজিদ তিনজনে প্রফেসর আহমেদের গবেষণাগার খুঁজে বার করে । প্রফেসর আহমেদের গবেষণাগারটি বিভিন্ন মাত্রার সময়প্রবাহের অল্টারনেট রিয়েলিটিতে বিচরণ করছিল।

গল্পের অন্তিম পর্যায় এসে মৌমিতা ভুল করে সেই সময়ের ঘূর্ণির মধ্যে ঝাপিয়ে পরে। নার্গিস ইন্দ্র আর মাজিদের সাথে মৌ সেই সময়ের মধ্যে ঢুকে পড়ায় সেও সময় ঘূর্ণির শিকার হয়। আর ঠিক এরপরই নারোগের সাথে সবার ভয়ানক যুদ্ধের পর নারোগ মারা যায়। আর এই সব ধস্তাধস্তি কারণে মৌমিতা আহত হয় । নারোগ এর পরিবর্তে ইন্দ্র তার জায়গায় সময় রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। নার্গিস স্পেস টাইম ভরটেক্স থেকে মুক্ত হয় এবং আহত মৌমিতাকে সেখান থেকে বার করে।

অবশেষে ইন্দ্র সময় রক্ষক হিসেবে আই টি ডি এস এস এ প্রবেশ করে। নার্গিস আর মৌমিতা ভগ্নহৃদয়ে প্রফেসর আহমেদের গবেষণাগার থেকে বেরিয়ে ফিরে আসে তাদের ব্রম্ভান্ডে – সেই প্রথম দিনের পার্টির রাতে অর্থাৎ যেখানে ইন্দ্রের জন্য অনির্বাণ ও রণজিৎ অপেক্ষা করছিল।

গল্পের শেষে নার্গিস নিজেকে প্রতিশ্রুতি দেয় যে করেই হোক সে ইন্দ্রকে ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু প্রফেসর আহমেদের গবেষণাগারের অল্টারনেট রিয়েলিটির অস্তিত্ব না থাকার কারণে মৌমিতার উপস্থিতি তে পরিবর্তন ঘটে। একই সময়ে একই ব্রম্ভান্ডে দুটি ভিন্ন সময়প্রবাহের মৌমিতার অস্তিত্ব তৈরি হয় এবং এক নতুন টাইম প্যারাডক্স এর জন্ম হয় ।

Director’s Profile (Bengali Version)

অর্ক দাশগুপ্ত 20 বছর ধরে বিনোদন জগতের সাথে যুক্ত রয়েছেন, অর্ক একজন সংগীতশিল্পী হিসেবে বিনোদন জগতে তার যাত্রা শুরু করেন । তিনি একজন ব্লুজ সঙ্গীতশিল্পী এবং একাধিক রক, ফিউশন ব্যান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন । এরপরই ব্যক্তিগত কারণে তিনি বিনোদন জগৎ ছেড়ে দেন এবং ব্যাঙ্কার হিসাবে কাজ করেন। এরপর দীর্ঘ 8 বছর বিনোদন জগত থেকে দূরত্বের পর “পয়লা বৈশাখ – এ জার্নি থ্রু টাইম” এর মধ্যে দিয়ে তিনি আবার বিনোদন জগতে ফিরে আসছেন।

অর্কর শৈশব থেকেই বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞানের প্রতি চরম আগ্রহ এবং ভালোবাসা। তার শৈশবের প্রিয় কল্পবিজ্ঞান লেখক জুলে ভার্ন, এডগার অ্যালান পো, আর্থার সি. ক্লার্ক, স্যার আর্থার কোনান ডয়েল, এইচ. জি. ওয়েলস্ এবং সত্যজিৎ রায় প্রমূখের অনুপ্রেরণায় পয়লা বৈশাখের জন্ম। আর অর্ক দাশগুপ্ত র মতে তিনি আগামীদিনে বাংলা চলচ্চিত্র জগতকে আরও অনেক কল্পবিজ্ঞান চলচ্চিত্র উপহার দিতে পারবেন ।

Director’s Note (Bengali Version)

আমি একটি অতিপ্রাকৃতিক বৈজ্ঞানিক ঘটনাকে একটি কাব্যিক ত্রিকোণ প্রেমের গল্পের মাধ্যমে দেখাতে চেয়েছি, যেখানে নতুন প্রজন্মরা আবেগ ও যুক্তিগত ভাবে উভয়ভাবেই একাত্ব হতে পারে। যেকোনো ‘পরিবর্তনের শুরু” ই অচলায়তনের দেয়ালের ইট কাঁপিয়ে দেয় এবং স্বতঃসিদ্ধ সামাজিক সত্যের মেকি আবারণকে কেটে টুকরো টুকরো করে দেয় এক সামুরাই এর কাটানার মত এবং সমগ্র মানবজাতিকে নিয়ে আসে এক নতুন বিশ্বাস ও আশার পৃথিবীতে যেখানে অমর মানবিক ধীশক্তি সকল পার্থিব জীবিত আত্মার ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

পয়লা বৈশাখে, আমরা এক অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা তৈরি করেছি- সময় ঘূর্ণি অথবা space- time vortex যেখানে তিনটি সময় প্রবাহ একই সময় বিন্দুতে সংঘর্ষ করে এবং তৈরি করে এক নতুন ব্রম্ভান্ড । আর সেখানেই আমাদের গল্পের মূখ্যচরিত্র- ইন্দ্র আটকে পড়ে এক অচেনা নারী অর্থাৎ নার্গিসের সাথে।

এখন এ সমস্ত সময়প্রবাহগুলির একটি নির্দিষ্ট সময় সীমা রয়েছে, যদিও প্রতিটি পয়লা বৈশাখের সময়ের মান বা এবং সমস্ত ঘটমান ঘটনা গুলো এক। এই অসঙ্গতি একাধিক অবিচ্ছিন্ন টাইম লুপের সৃষ্টি করছে যাকিনা পরিবর্তিত হচ্ছে সময় ঘূর্ণি বা space- time vortex এ । এই সময় ঘূর্ণির ফলে সময়ের সাধারণ প্রবাহের চেয়ে এই নতুন সৃষ্ট সময় প্রবাহ ধীর হয়ে পড়ছে ক্রমশ।

আমার ধারণা এ ধরনের কল্পবিজ্ঞানমূলক ছবি নতুন প্রজন্মের ভালো লাগবে । আমি বরাবরই এধরণের কল্পবিজ্ঞানমূলক ছবি পছন্দ করি আর সেই কারণেই অগণিত বাধার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও আমি এবং আমার দল “পয়লা বৈশাখ” তৈরী করেছি।

More From Author

Lighting Up Every Corner: Goldmedal Introduces Luxo 30W Flood Light for Indian Homes

জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলো বিএসএফের ৪৮তম আন্তঃসীমান্ত ফুটবল প্রতিযোগিতা-২০২৫ এর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *