Site icon News Bengal Online

ব্রজ গোপিকা সেবা মিশন শিশুদের মনোবিকাশে জোর দিচ্ছে

নিজস্ব প্রতিনিধি –

রূপধ্যান। সাধনার এক অনন্য ধারা যা ঈশ্বরের কাছে মানুষের পৌঁছে যাওয়ার পথ আরও সহজ করে। যাঁরা আধ্যাত্মিকতার মধ্যে জীবনের আনন্দ ও ভক্তি খোঁজেন এই সহজ পন্থা তাঁদেরই জন্য। এমনই মনে করেন স্বামী যুগলশরণ । এখন তিনি কলকাতা এবং পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন শহর থেকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন আনন্দময় জীবনে উত্তরণের ঘটানোর উপায় নিয়ে। প্রতিষ্ঠা করেছেন ব্রজ গোপিকা সেবা মিশন। মনোবিকাশ ও সামাজিক শিক্ষার পাশাপাশি কেরিয়ার অপার্চুনিটি কোর্সও এখানে করানো হয়। এর মাধ্যমে করোনার সময় দেশজুড়ে অন্তত চার হাজার মানুষ করোনার ভীতি কাটাতে মানসিক শক্তি অর্জন করেছেন।

কোনও শিক্ষা শুরু করার প্রকৃষ্ট সময় শৈশব। তাই বালসংস্কার শিবির আয়োজন করে প্রথমে তাদের মনের গঠন উপযুক্ত করা, তারপরে যুব উত্থান শিবিরের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের মনকে আধ্যাত্মিকতার পথে পরিচালনা করে দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। সঙ্কটের সময়ে মতি স্থির রাখার শিক্ষা দিচ্ছেন।

প্রথম থেকেই মেধাবী ছাত্র। আধ্যাত্মিকতার টানে ছেড়েছেন জিওলডিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিকের চাকরি। তাতেও সন্তুষ্ট হননি। এখন আর্তের সেবা ও শিশুদের কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন স্বামী যুগলশরণ জি। বৈষ্ণব বংশে জন্ম এই সন্ন্যাসী অবশ্য নিজেকে গুটিয়েই রাখেন, তাঁর আধ্যাত্মিক গুরু কৃপালুজি মহারাজের প্রচারক হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেই তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ। সঙ্গে আলোর পথ দেখানো। তাঁর জীবনের মূল মন্ত্র যেন—তমসো মা জ্যোতির্গময়।

কথায় কথায় তিনি উদ্ধৃত করেন বেদ, উপনিষদ, ভগবদ্গীতা, শ্রীমদ্ ভাগবতম্, রামায়ণ প্রভৃ্তি থেকে। ২১ বছরে দেশে বিদেশে সব মিলিয়ে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজিতে ১৫ হাজার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বক্তৃতা করেছেন। সেকথা শুনেছেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নাগরিকত্ব নির্বিশেষে অসংখ্য মানুষ। তাঁর প্রতিষ্ঠান ব্রজ গোপিকা সেবা মিশন দেশজুড়ে আর্তের সেবা করছে। বহু মানুষের চিন্তাভাবনায় স্বচ্ছতা এনে দিয়েছেন।

স্বামীজির তাঁর আধ্যাত্মিক জীবনের শুরু পশ্চিমবঙ্গে। এখন এরাজ্যে ২৩টি ও পুরো দেশে ৬৫টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাস্তব জীবন, অর্থাৎ গৃহীর জীবনে আধ্যাত্মিকতা কীভাবে জীবনের পথ আলোকিত ও সুন্দর করে গড়ে তোলা যায় সেই শিক্ষাই তাঁরা দেন। শেখান, কীভাবে ভারসাম্য রাখতে হয় এই দুই জীবনের মধ্যে। ২০০০ সাল থেকে তিনি এই কাজ করে চলেছেন। জীবনদর্শন নিজে তাঁদের শিক্ষা অনেককে পথ

দেখিয়েছে। এই ধারা বজায় রাখতে এই বছরই নবদ্বীপ-মায়াপুরের মালপাড়ায় স্থাপিত হয়েছে সাধনা ভবন নামে প্রতিষ্ঠান। ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানে ভক্তি রিসার্চ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান স্বামীজী।

Exit mobile version